যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

আক্রমণ , পাল্টা আক্রমণ ! যত দিন যাচ্ছে আরও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে রাশিয়া - ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে । 

   সম্প্রতি ক্রিমিয়ার সাথে রাশিয়ার সংযোগকারী সেতুর ওপর হামলার জন্য সরাসরি ইউক্রেন কে দায়ী করেছে রাশিয়া । ক্রেমিয়ার সেতুতে এই বিস্ফোরণের ঘটনাকে ' সন্ত্রাসী তৎপরতা ' বলে বর্ণনা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন । শুধু দায়ী করাই নয় , সাথে সাথে পাল্টা আক্রমনও শুরু করে দিয়েছে মস্কো বাহিনী । 

   সুত্র মারফত জানা গেছে ইউক্রেনের ওপর ৮৪ টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগ করেছে রুশ  বাহিনী । ফলে পরিস্থিতি ক্রমশও জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে । সব থেকে দুশ্চিন্তার কারণ , এই যুদ্ধের ফল প্রায় সব দেশকেই পরোক্ষ ভাবে ভোগ করতে হচ্ছে । আর এই যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে এই যুদ্ধ সহজে থামবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।  দীর্ঘমেয়াদে যুদ্ধ চললে তা ইউক্রেনের মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে । বিশ্লেষকেদের অনেকেই সতর্ক করে বলেছেন, যেসব দেশ ইউক্রেনকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ চললে সেসব দেশের জনগণ ক্ষুব্ধ হতে পারে। বিশেষত যুদ্ধের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়লে ও অর্থনৈতিকসংকট জোরদার হলে এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে । ফলে সেসব দেশও রাজনৈতিক সংকটে পড়তে পারে । 

     জ্বালানিসংকটের কারণে এবারের শীতে ইউরোপবাসীর জীবন বিপর্যস্ত হতে পারে। সেই সঙ্গে রয়েছে জিনিসপত্রের বাড়তি দাম, যা জীবনযাপনের ব্যয় বাড়িয়ে দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ইউরোপবাসীর মনে ইউক্রেনীয়দের জন্য আবেগ কমতে শুরু করেছে। চলতি মাসে চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ রাজপথে নেমে বিক্ষোভ করেছেন। তাঁদের মতে, চেক সরকার ইউক্রেনীয়দের দুর্দশা নিজ দেশের নাগরিকদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এর প্রমাণ।


এমন মনোভাব ইউরোপের আরও অনেক দেশের মানুষের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। নিজেদের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার জন্য তাঁরা ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করছেন।

      ভারতের মতো তেল আমদানিকারী দেশগুলোর কাছে অশোধিত তেলের দাম কমলে খরচ কমে আর দাম বাড়লে বাড়তে থাকে খরচ। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের যে পরিস্থিতি, তার ফলে আবারও দাম বাড়ছে অশোধিত তেলের। তাই বাড়ছে পেট্রোল-ডিজেলের দামও। একেই বর্তমানে  ক্রুড অয়েলের  দাম ৯৮ টাকা পেরিয়ে গেছে, তার ওপর আবারো নতুন করে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফল পরোক্ষ ভাবে ভারতকেও ভোগ করতে হবে।

   এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের একমাত্র উপায় যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধের অন্ত ঘটানো । কিন্তু কথাটি বলা যতটা সহজ , এটার বাস্তবায়ন ততটাই কঠিন । ভারত বরাবরই শান্তির পক্ষে । এক্ষেত্রেও যুদ্ধের শুরু থেকেই কোনো দেশকেই সমর্থন করেনি ভারত । ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসসিও সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখোমুখি বসে বলেছেন ' এই সময় যুদ্ধের নয় '। যা প্রশংসিত হয়েছে বিশ্বের প্রায় সমস্ত মহলে । 

      প্রথম থেকেই একটি শান্তিকামী দেশ হিসেবে  তথা গোটা বিশ্ব কে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে এভাবেই নিজেদের অবস্থান রেখেছে ভারত । সম্প্রতি , আবারও ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের জানানো হয়েছে যে , যুদ্ধের পথ থেকে শান্তির পথে ফিরে আসতে আমাদের দেশ ভারত যেকোনো উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত । 

   " পৃথিবী আবার শান্ত হবে " , গানের কথা টি বাস্তবে ফিরে আসুক , এটাই বর্তমান পরিস্থিতিতে সকল শান্তিকামী মানুষের ইচ্ছা । 

Write a comment ...

Write a comment ...